যুগভেরী রিপোর্ট : ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার বাতিল সহ ৬ দফা দাবিতে সিলেট জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন প্রিপেইড মিটার প্রতিরোধ আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দ। ৬ নভেম্বর বুধবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন প্রিপেইড মিটার প্রতিরোধ আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ ইকতার খান ও মোর্শেদ মুকুল। সদস্য সচিব মোঃ মনসুর হোসেন খান, মোতাহার হোসেন জিয়াদ, আবু বক্কর সিদ্দিক ও সদস্য পিনাক কর প্রমুখ। পরে স্মারকলিপির অনুলিপি দক্ষিণ সুরমার পিডিবির বরই কান্দি কার্যালয়ে প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি উল্লেখ করা হয়, আমরা সিলেটবাসী এই প্রিপেইড মিটারের ভোগান্তিতে পড়তে চাইনা। সম্প্রতি আমাদের এলাকায় গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পূর্বের মিটার গুলোকে ডাস্টবিনে ফেলে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার লাগানোর কোন প্রয়োজন নেই। কারণ এই মিটারের টাকা তো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সেই গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা দিয়ে সেই টাকাতেই বণ্টন কোম্পানী ব্যবসা করবে। যেটা অন্যায় ও অনৈতিক। আমরা এই ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার থেকে হয়রানি ও ডিজিটাল প্রতারনা থেকে বাচতে আমাদের ৬ দফা দাবি। দাবীগুলো নিম্নরূপ:
১. অনতি বিলম্বে ডিজিটাল প্রি-পেইড মিটারের চুক্তি বাতিল করতে হবে।
২. নতুন সংযোগে ও পুরাতন মিটার নষ্ট হলে সেক্ষেত্রে প্রি-পেইড মিটার না দিয়ে পূর্বের পোস্ট পেইড মিটার স্থাপন করতে হবে।
৩. নতুন স্থাপনকৃত প্রি-পেইড মিটার প্রত্যাহার করে পূর্বের পোস্ট পেইড মিটার পুনরায় স্থাপন করতে হবে।
৪. অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৫. লোড শেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৬. বিদ্যুৎ বিল থেকে ডিমান্ড চার্জের নামে অর্থ নেওয়া বন্ধ করা ও বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের দাবী।
ভুক্তভোগী প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহকদের অভিযোগ: পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম চলছে। বর্তমান প্রিপেইড মিটারে আগের ডিজিটাল মিটারের আড়াইগুণ বেশি বিল নেওয়া হচ্ছে। কারো আগের বিল যদি ১১০০/- টাকা হত এখন প্রিপেইড মিটারের বিল আসছে ২৫০০/- টাকা। এছাড়া মিটার ভাড়া আগের চেয়ে ৪ গুণ, বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ থাকলেও মিটার থেকে টাকা কাটা যাওয়া, প্রিপেইড মিটারের বিদ্যুৎ বিল ডিজিটাল মিটারের দ্বিগুণ।
প্রিপেইড মিটার নষ্ট হলে তা পরিবর্তন করা এবং নষ্ঠ মিটারের ভুতুড়ে বিল সংশোধন করা অসম্ভব হয়ে দাড়াবে। মিটারের রিডিংম্যান সহ শত শত কর্মচারীও কাজ হারাবে। বিদ্যুৎ আইন ধারা মতে গ্রাহকের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হলে কোম্পানীকে ১৫ (পনের) দিন পূর্বে নোটিশ দিতে হয়। কিন্তু এই প্রিপেইড মিটারের কার্ড শেষ হলে সাথে সাথেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। যা বিদ্যুৎ আইন অনুযায়ী সঠিক নয়। উন্নত প্রযুক্তির সুপার কম্পিউটারের কন্ট্রোলে এই মিটারগুলো থাকবে। যার মধ্য দিয়ে গ্রাহকের টাকা লুট করার যথেষ্ট সম্ভবনা থাকবে। পর্যাপ্ত ভেন্ডিং বা রিচার্জ স্টেশন না থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে কার্ড কেনা প্রভৃতি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া একাধিক বার কার্ড ক্রয়ের ঝামেলা পোহাতে হয় ও হঠাৎ মিটার লক হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ইমারজেন্সী ব্যালেন্সের জন্য অতিরিক্ত কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রিপেইড মিটার বিলের সঙ্গে আগের স্থাপিত সেন্ট্রাল মিটারেরও চার্জ কাটা যায়, প্রতি রিচার্জেই একটি নিদৃষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হয়।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন