এশিয়ার প্রাচীনতম বাংলা সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশ ১৯৩০

প্রিন্ট রেজি নং- চ ৩২

২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ-টাকা লেনদেনের সাক্ষী হওয়ায় অপহরণ-নির্যাতনের শিকার কুরআনের হাফেজ

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর, সোমবার, ২০২৪ ১৭:৪১:১৩
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ-টাকা লেনদেনের সাক্ষী হওয়ায় অপহরণ-নির্যাতনের শিকার কুরআনের হাফেজ

যুগভেরী ডেস্ক ::: ট্রাভেল ব্যবসায়ীর সঙ্গে টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্রে সাক্ষী হয়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এক কুরআনে হাফেজকে। এমনকি ট্রাভেল ব্যবসায়ীকে না পেয়ে সাক্ষী ওই কুরআনে হাফেজকে জিম্মি করে ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মায়েরকুল গ্রামের মো. নুরুল হকের ছেলে হাফিজ কারি মো. আজিজুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন- পেশায় ব্যবসায়ী আজিজ বর্তমানে সিলেটের জালালাবাদ থানার আখালিয়া নয়াবাজারের বাসিন্দা। তবে তিনি মায়েরকুল জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লি ও মায়েরকুল জামে মসজিদের দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্ট শাখার শিক্ষাসচিব। তার উপজেলা ছাতকের ঝামক গ্রামের মৃত আশক আলীর ছেলে সুজন মিয়া এবং সিলেট মহানগরের ইদ্রিস মার্কেটস্থ রাহাবার ট্র্যাভেলস-এর স্বত্বাধিকারী ও ছাতক উপজেলার জিয়াপুর গ্রামের আনা মিয়ার ছেলে নুর আহমদ নোমান তার পূর্ব পরিচিত। অপরদিকে, সুজন মিয়ার বাড়িতে লজিং মাস্টার ছিলেন নুর আহমদ, ফলে তারাও পরষ্পর বেশ ঘনিষ্ট। এই সুবাধে কয়েক মাস আগে সুজন মিয়ার ছেলে শাওন আহমদকে লন্ডন পাঠানোর জন্য ট্রাভেল ব্যবসায়ী নুর আহমদের সাথে আলাপ হয়। এই বিষয়েরু সুজন ও নুর আহমদের মাঝে ২৩ লক্ষ টাকা আদান-প্রদানের লিখিত চুক্তি হয় এবং দুজনের অনুরোধে সে চুক্তিপত্রে হাফিজ আজিজ সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু পরবর্তীতে শাওনকে লন্ডন পাঠাতে ব্যর্থ হন নুর আহমদ। এতে সুজন ও নুর আহমদের মাঝে বিরোধ তৈরি হয়। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে নুর আহমদ নোমানের অফিসে ২৩ সেপ্টেম্বর বৈঠক হয়। বৈঠকে হাফিজ আজিজ ও আরও কয়েকজন মুরুব্বি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নুর আহমদ ১ মাসের মধ্যে সব টাকা ফেরত দিবেন বলে জানান। কিন্তু এর মাঝে গত ২১ অক্টোবর বেলা ২টার দিকে সুজন মিয়া মোবাইল ফোনে দরগাহ গেইট এলাকার শাহজালাল রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে যান আজিজকে। আলোচনার এক পর্যায়ে আজিজকে সুজন মিয়া ট্রাভেল ব্যবসায়ী নুর আহমদকে খুঁজে দিতে চাপ দেন। তখন নুর আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে আজিজ জানালে সুজন উত্তেজিত হয়ে যান এবং তিনি ও তার সহযোগিরা আজিজকে ধরে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আজিজকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় তুলে মুখ ও হাত-পা বেঁধে জালালাবাদ রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল রোডের একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন সুজন। এসময় চাকু ধরে আজিজের বোন ও চাচাকে ফোন দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা এবং চেক বই নিয়ে আসতে বলেন অপহরণকারীরা। আজিজকে বাঁচাতে সেদিন রাতে তার চাচা ও স্ত্রীর বড় ভাই ৫ লক্ষ টাকা এবং চেক বই নিয়ে ওই বাসায় নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ামাত্র তাদেরও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সুজন মিয়া এবং তার সহযোগিরা কয়েকটি চেকের পাতা ও ১০০ টাকার ৩টি সাদা স্ট্যাম্পে এবং সাদা কাগজে আজিজের স্বাক্ষর ও আজিজের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাদের নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।
পরে এ বিষয়ে হাফিজ আজিজ সিলেট জালালাবাদ ও কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু থানাপুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা (কোতোয়ালি সি.আর-১৩৩৫/২০২৪) দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর হাফিজ আজিজের প্রতি সুজন মিয়ার আক্রোশ আরও বেড়ে যায়। আজিজ বলেন- তিনি ও তার পরিবারের সবাইকে মামলা-হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে অবিরত। এমনকি আজিজকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন সুজন মিয়া, মামলা তুলে নিতে দিচ্ছেন অবিরাম চাপ। এ অবস্থায় তারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন, ভোগছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়।
সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন হাফিজ আজিজুর রহমান।

সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন