যুগভেরী ডেস্ক ::: সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে ‘সুশান্ত দাস গুপ্ত’ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা একটি পোস্টকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
সুশান্ত দাস গুপ্ত নামে ওই ব্যক্তি তার পোস্টে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’ এর একটি ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন করেন, ‘ডিল ডান?’ ‘সেন্ট মার্টিন গন?’
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ জানিয়েছে, সেন্ট মার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস আরও জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টকসের সঙ্গে সেন্ট মার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব। অন্তর্বর্তী সরকার অনেকবার জানিয়েছে যে সেন্ট মার্টিন কোনো বিদেশি দেশের কাছে কোনো উদ্দেশে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই।
এদিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে মোরশেদ মাহবুবুল নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর করা পোস্টেরও ব্যাখ্যা দিয়েছে সিএ প্রেস উইং।
মোরশেদ মাহবুবুল নামের ওই ব্যক্তি তার পোস্টে দাবি করেন, ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বর্তমান অবস্থা: ১. সাগরে মাছ ধরা বন্ধ; ২. পর্যটক আসা সম্পূর্ণ বন্ধ; ৩. হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ তিন মাস; ৪. বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ শাটডাউন। ’
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন কমপক্ষে ২০ ধরনের বিপদের মুখে পড়েছে। সম্প্রতি ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যাডভান্স’ নামের একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে।
এদিকে, পর্যটনের কারণে সেন্ট মার্টিনে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে।
ক’মাস ধরে দ্বীপে আরেকটি নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর সাদা মাছির উৎপাত। এই মাছি দ্বীপের গাছপালা ধ্বংস করছে। সাদা মাছির কারণে গত কয়েক মাসে ৩০০ নারকেল গাছ মারা গেছে বলে জানা যায়।
বিশেষজ্ঞরা সেন্ট মার্টিনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত পর্যটনকে দায়ী করছেন।
আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষণা অনুযায়ী, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটির ৪১ ভাগ প্রবাল ধ্বংস হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ থামানো না গেলে ২০৪৫ সালের মধ্যে এই দ্বীপের সব প্রবল ধ্বংস হবে যাবে, আর দ্বীপটি ডুবে যাবে। সরকার এই দ্বীপ রক্ষায়, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে, আর বেআইনি স্থাপনার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বৃহত্তর জনস্বার্থে। দেশের একমাত্র প্রবালের দ্বীপ সেন্ট মার্টিন বেঁচে থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্যও।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন