এশিয়ার প্রাচীনতম বাংলা সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশ ১৯৩০

প্রিন্ট রেজি নং- চ ৩২

২৪শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২১শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে রামু ট্রাজেডির এক যুগকে স্মরণ করে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ২৯ সেপ্টেম্বর, রবিবার, ২০২৪ ১৯:০৯:০৬
সিলেটে রামু ট্রাজেডির এক যুগকে স্মরণ করে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন

যুগভেরী ডেস্ক ::: সিলেটে রামু ট্রাজেডি এক যুগকে স্মরণ করে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চল এর প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সংগঠক, মানবতার ফেরিওয়ালা, সাংবাদিক উৎফল বড়ুয়া উদ্যোগে বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চল এর সভাপতি লিটন বড়ুয়ার সিলেটস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ সিলেট অঞ্চল সিনিয়র সহ সভাপতি তপতি বড়ুয়া, রমা বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক দিলু বড়ুয়া, অর্থ সম্পাদক সেবু বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুমন বড়ুয়া, শেলু বড়ুয়া, সেতু বড়ুয়া,টিনা বড়ুয়া, অয়ন বড়ুয়া, সীমান্ত বড়ুয়া জয়, সেতু বড়ুয়া মুক্তা,আপন বড়ুয়া হিমেল বড়ুয়া, অবন্তী বড়ুয়া প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তম বড়ুয়া নামের এক বৌদ্ধ যুবকের ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননার একটি ছবি ট্যাগকে কেন্দ্র করে রামুতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ ঘটনা।প্রিয় মাতৃভূমি খুব বেশি অশান্ত হয়ে উঠেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, পাহাড় থেকে সমতল কোথাও যেন শান্তির সুবাতাস নেই। সাম্প্রদায়িক উসকানির দাবানলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে সম্প্রীতির বাংলাদেশ। একের পর এক হামলায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। শান্তির প্রত্যাশায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে সর্বত্যাগী বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরাও। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া রামুর ক্ষত এখনো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন থেকে মোছেনি। আজ সেই স্মরণকালের ভয়ার্ত দিন। ভয়াবহ ঘটনার এক যুগ। ১২ বছরে মামলার নিষ্পত্তির কথা বাদ, তদন্তই এগোয়নি। বিচার প্রক্রিয়ার গতি নেই। পবিত্র কুরআন অবমাননার মিথ্যা অজুহাত তুলে সেদিন রামু, এরপর উখিয়া, পটিয়াসহ অন্তত ১৫টি বৌদ্ধ বিহার ও ৪০টিরও অধিক বৌদ্ধ জনবসতিতে হামলা, লুটপাট, আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে ইতিহাসের অনন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল, উপাসনালয়, বিহার ও বৌদ্ধ স্থাপনা। ‘৬০০ থেকে ১১০০ শতকে নির্মিত কাঠ, পাথর, স্বর্ণ ও ধাতুর তৈরি চার শতাধিক অবিস্মরণীয় বৌদ্ধমূর্তিকে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়। ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে বৌদ্ধ শিল্পকলায় নির্মিত কেন্দ্রীয় সীমা বিহার ভস্মীভূত হয়। লাল চিং, সাদা চিং, মৈত্রী বিহার, প্রাচীন তালপাতার পুঁথি এবং বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে নির্মিত ‘ভুবন শান্তি ১০০ ফুট সিংহশয্যা গৌতম বুদ্ধের মূর্তিটি ছিল দেশের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় শায়িত বৌদ্ধমূর্তির নির্মাণ শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর, উচ্চতায় ছিল ৪০ ফুট। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি উদ্বোধনের দিনক্ষণও ঠিক করা হয়েছিল; কিন্তু এর আগেই সাম্প্রদায়িক হিংসার অনলে দগ্ধ হয় এই বৌদ্ধমূর্তিও। বুদ্ধ তো শান্তি ও মৈত্রীয় প্রতীক। পৃথিবীজুড়ে যেসব মূর্তি আছে বৌদ্ধমূর্তির একটা আলাদা সৌন্দর্য লক্ষ করা যায়। দেখার সঙ্গে সঙ্গে যে কেউ ভক্তি শ্রদ্ধায় নমিত হয়। তাহলে কেন, কোন কারণে বারবার বৌদ্ধমূর্তির ওপর হামলা। মূর্তি তো কথা বলতে পারে না। তাহলে এই মূর্তিকে এত ভয়ের কারণ কী?
রামুর ক্ষত এখনো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন থেকে মোছেনি। আজ সেই স্মরণকালের ভয়ার্ত দিন। ভয়াবহ ঘটনার এক যুগ। ১২ বছরে মামলার নিষ্পত্তির কথা বাদ,তদন্তই এগোয়নি। আমরা অনতিবিলম্বে রামু ট্রাজেডির সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন