এশিয়ার প্রাচীনতম বাংলা সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশ ১৯৩০

প্রিন্ট রেজি নং- চ ৩২

২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটের বন্দরবাজারে ব্যবসায়ী-অটোচালকদের মাঝে সংঘর্ষ : এখন সমাধান হয়নি-ফের বৈঠক বুধবার

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ১৩ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার, ২০২৪ ১২:০৪:১১
সিলেটের বন্দরবাজারে ব্যবসায়ী-অটোচালকদের মাঝে সংঘর্ষ : এখন সমাধান হয়নি-ফের বৈঠক বুধবার

যুগভেরী ডেস্ক ::: সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারে ব্যবসায়ী এবং সিনএজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মাঝে সংঘর্ষের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত বৈঠক কোনো সমাধান হয়নি। ফলে আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফের বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে ব্যবসায়ী ও অটোচালকদের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে বেলা সোয়া ২টা পর্যন্ত সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারে সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং সিনএজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের ১৫-২০ জন আহত হন এবং ২৫-৩০টি গাড়ি ও ৫টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। পরে বিকাল ৩টায় দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নেয় পুলিশ। বৈঠকে কোনো সুরাহা না হওয়ায় রাত সাড়ে ৮টায় সিলেট সার্কিট হাউসে ফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব- ট্রাফিক) বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের, প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপিস্থিত ছিলেন।

 

বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমাধান না আসায় ১৫ জনের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া। এতে পুলিশ প্রশাসন, ব্যবসায়ী সংগঠন এবং পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের ৫ জন করে প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা সংঘর্ষের বিষয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়ে বুধবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে তথ্য উপাস্থপন করবেন এবং এর ভিত্তিতে বিষয়টির সমাধান করা হবে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এসএমপি’র মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

জানা যায়, বন্দরবাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেটের সামনে রাস্তায় অটোরিকশা পার্কিং ও যাত্রী উঠানো-নামানো নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মার্কেটের সামনে একটি অটোরিকশা যাত্রী নামিয়ে ভাড়া নিতে গেলে ব্যবসায়ীরা গাড়ি সরাতে বলেন। এসময় ওই অটোচালক ও ব্যবসায়ীদের বাকবিতন্ডা শুরু হলে কয়েকজন অটোচালক জড়ো হয়ে ব্যবসায়ীদের দিকে মারমুখী হন এবং দুপক্ষের মাঝে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে কিছুক্ষণ পর দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয় এবং অটোচালকরা পিছু হটেন। এর কিছুক্ষণ পর ফের তাদের ধাওয়া করে বন্দরবাজার ছাড়া করেন ব্যবসায়ীরা। এসময় অজস্র ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন ব্যবসায়ীরা। এই হাতাহাতি, ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় সিটি মার্কেটের ৫টি দোকান ভাঙচুর করেন অটোচালকরা।

অপরদিকে, ব্যবসায়ীরা প্রাইভেটকার ও অটোরিকশাসহ ২৫-৩০টি ঘড়ি ভাঙচুর করেন। এসময় উভয়পক্ষের ১৫-২০ জন আহত হন।

পরে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নেয়।

এদিকে, ঘটনার পর থেকে বন্দরবাজার এলাকা অবরোধ করে রাখেন অটোরিকশাচালকরা। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এসএমপি’র উপ-কমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহেরের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।

বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী ও অটোচলকরা করেছেন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। ব্যবসায়ীরা বলছেন- তারা দীর্ঘদিন ধরে সিটি মার্কেটের সামনে অটোরিকশা পার্কিং ও যাত্রী উঠানো-নামানো না করতে নিষেধ করছেন। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষও দিয়েছে এমন নির্দেশনা। কিন্তু কোনো নির্দেশনা না মেনে অটোচালকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সিটি মার্কেট, সিটি করপোরেশন, কুদরত উল্লাহ মসজিদ মার্কেট ও পোস্ট অফিসের সামনে সড়ক দখল করে পার্কিং করে রাখে, করে যাত্রী উঠা-নামা। বিষয়টি নিয়ে আজও কথা বলতে গেলে অটোচালকরা মারমুখী আচরণ করে এবং সিটি মার্কেটের ৫টি দোকান ভাঙচুর করে।

অপরদিকে অটোচালকরা বলছেন- তারা বিষয়টি নিয়ে সমঝোতাবৈঠক চাচ্ছিলেন। এরই মাঝে ব্যবসায়ীরা তাদের উপর হামলা করেছেন। এর সঠিক জবাব না দেওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে রাখবেন।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন