যুগভেরী ডেস্ক ::: সিলেট মহানগর বিএনপির ৯নং ওয়ার্ড কমিটির একটি সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাদা কাগজে উপস্থিতির স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। মনগড়া রেজুলেশন তৈরি করে সিলেট মহানগর আওতাধিন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেনকে বয়কটসহ কমিটি থেকে তাকে বহিস্কার করার জন্য মহানগর নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ওয়ার্ড বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির ৪৮ জন সদস্য। তবে সদস্যদের স্বাক্ষর সত্য হলেও ভুয়া রেজুলেশনের প্রতিবাদে সিলেট মহানগর আওতাধিন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাটি গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) রাতে নগরীর ৯নং ওয়ার্ডস্থ বাগবাড়ী এলাকায় ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সদস্য ও বিশিষ্ট মুরব্বি জনাব সানাউল হক সানার বাসায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমির হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক এস এম শাহজাহান এর পরিচালনায়, প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, উত্তর বাগবাড়ীর পাড়া কমিটির নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন চক্রবর্তী। আরো বক্তব্য রাখেন ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সিনিয়র সদস্য জনাব সানাউল হক সানা, ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি আজর আলী, সহ-সভাপতি আজির উদ্দিন,সহ-সভাপতি আউয়াল আহমদ, সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য আহসান মাহবুব, নির্বাহী সদস্য কামাল উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকরাম হোসেন মারুফ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর আলী, মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী সদস্য আব্দুর রকিব, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমির আলী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বিলকিস জাহান চৌধুরী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আহমদ, ক্ষুদ্রঋণ ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান নিজাম, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শাহিন আহমদ, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সুজন আহমদ, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পারভিন আক্তার চৌধুরী, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সামাদ, সহ-মুক্তিযুন্ধ বিষয়ক সম্পাদক সামসু আহমদ, সহ- ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ফারহান রাহাত রাসেল, নির্বাহী সদস্য আজহারুল ইসলাম হাদী, নির্বাহী সদস্য দুলাল মিয়া, নির্বাহী সদস্য সাদিকুর রহমান,নির্বাহী সদস্য মবশ্বর আলী, নির্বাহী সদস্য মানিক মিয়া, নির্বাহী সদস্য জমির আলী, প্রচার সম্পাদক রুবেল আহমদ, নির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ, নির্বাহী সদস্য তরিকুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য সুয়েব আহমদ, নির্বাহী সদস্য সাব্বির আহমদ জীবন। এছাড়াও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন কানাডা থেকে ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক, যুক্তরাজ্য থেকে সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান হানু এবং কানাডা থেকে দপ্তর সম্পাদক অঙ্কুর দেব। উল্লেখ্য,কার্যনির্বাহী কমিটির দুইজন সদস্য ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়াও পাড়া কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কামরুজ্জামান কামরুল,সুজিত দেব,সঞ্জু কপালী, আনছার উদ্দিন, শরিফ মিয়া,শেখ কামাল, আমিনুর রশিদ, সোহাগ আহমদ,প্রবির তালুকদার, আক্তার মিয়া,সুয়েল আহমদ,অপু মিয়া প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, গত ১০/০১/২০২৫ ইং তারিখে ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুবেল বক্স বিএনপির একটি জরুরী মিটিংয়ের কথা কার্যকারী কমিটির সকলকে ধানুহাঠার পার নূরানী মাদ্রাসায় আমন্ত্রণ জানান। সেখানে যথা সময়ে কমিটির সকল উপস্থিত হলে তাদেরকে উপস্থিতির জন্য সাদা কাগজে সাক্ষর করান। পরবর্তীতে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দরা উক্ত মিটিংয়ে সভাপতি আমির হোসেনের উপস্থিতি না দেখে রুবেল বক্সকে সভাপতি কোথায় জানতে প্রশ্ন করলে রুবেল বক্স বলেন আজকের সভার সহ-সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক সভাপতিত্ব করবেন বলে তাদেরকে জানান। একপর্যায়ে রুবেল বক্স আমাদের স্বাক্ষর একটি সাদা কাগজে নেওয়া শুরু করলে আমরা বার বার উনার কাছে কিসের স্বাক্ষর জানতে চাইলে তিনি আমাদেরকে বলেন উপস্থিতি সাক্ষর। শেষে সাক্ষর নিয়ে রুবেল বক্স আমাদের কাছে প্রস্তাবনা দেন যে ওয়ার্ড সভাপতি আমির হোসেনকে আমরা সবাই বয়কট চাই। এবং মানিকুর রহমান মানিক কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে তিনি দেখতে চান। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়ার্ড সভাপতি দলকে এবং দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে ছোট করে কথা বলেন ও তিনি ওয়ার্ডকে নিজের মতো করে চালান। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এই কথার জবাবে বলেন আমরা আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনেক দিন ধরে রাজনীতি করে আসছি উনি একজন ত্যাগী নেতা, আমাদের জানামতে উনি এইরকম কথা বলতে পারেননা। বিগত যতগুলো সিদ্ধান্ত উনি নিয়েছেন আমাদের পরামর্শক্রমে নিয়েছেন এবং স্বৈরাচার আমলে আমরা সবজায়গায় মিটিং করতে পারতাম না, বেশিরভাগ মিটিং হয় আমির হোসেনের বাসায় অথবা মরহুম আবুল হোসেন হেনা সাহেবের বাসায় হতো। তবুও যেহেতু একটি কথা উনার বিরুদ্ধে উঠেছে আমরা আমির হোসেনের সাথে কথা বলে সত্যতা যাচাই করে পরবর্তীতে আমাদের সিদ্ধান্ত দেব। এই সিদ্ধান্তে উক্ত মিটিং শেষ হয়। এর দুইদিন পরে তথা ১৪/০১/২০২৫ ইং তারিখে আমরা বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা থেকে জানতে পারলাম উক্ত সাদা কাগজে আমাদের সাক্ষর নিয়ে ভুয়া একটি রেজুলেশন করে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ নাকী সভাপতি মো: আমির হোসেনকে বয়কটের জানিয়ে মহানগর বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠিয়েছেন । যাহা আমাদের সিদ্ধান্ত ছিলো না। এই সিদ্ধান্তটি উক্ত সভার সভাপতি এবং পরিচালকের। উল্লেখ্য ,৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুবেল বক্স কয়েক জনকে সাথে নিয়ে মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যলয়ে এসে বৃত্তিহিন ভাবে বিভিন্ন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালানোর সময় আমির হোসেন প্রতিবাদ করেন। এর বিরুদ্ধে জের ধরে রুবেল বক্স ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা উপস্থিতি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পরবর্তীতে রেজুলেশন তৈরি করে বয়কট ঘোষণা করে তাকে বহিস্কার করার জন্য মহানগর নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন করেন বলে নেতৃবৃন্দরা মনে করেন। উক্ত ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ। এবং জানিয়েছেন উক্ত মিটিংয়ের সভাপতি এবং পরিচালক ওয়ার্ডের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের সাথে বেইমানী করেছেন। বক্তারা আরোও বলেন মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি হচ্ছে একটা অরাজনৈতিক সেবামূলক সমিতি। আমরা কেন ঐখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবো। আমরা চাই ব্যবাসয়ী সমিতি রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকতে। পাশাপাশি রুবেল বক্সে এর এই কর্মকান্ডের কারণে নেতৃবৃন্দরা উনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একমত হন। কেননা উক্ত কর্মকাণ্ড দলীয় শৃঙ্খলা, দলের নীতি-আদর্শ ভঙ্গ করেছে এবং দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নগরীর ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ ওয়ার্ড বিএনপির সার্বিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আমির হোসেন বলেন , ১০/০১/২০২৫ ইং তারিখে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রুবেল বক্স তুলেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে আমি বাজার কমিটিকে বিএনপি থেকে বড় করে কথা বলেছি, যা একটি মিথ্যাচার। আমি কোনদিন বিএনপিকে নিয়ে অত্যন্ত আপত্তিজনক মন্তব্য ও কটুক্তি করিনী । গত ১৯/১২/২০২৪ ইং তারিখে জনাব সানাউল হক সানা সাহেবের বাসায় মিটিং এ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা আমার বক্তব্যকে বিকৃত করেছে। উক্ত মিটিং এ সিনিয়র সদস্য আকসার বক্স জাহাঙ্গীর সাহেব আমাকে প্রশ্ন করেছে বাজার কমিটিতে আমাদের কয়জন নেতৃবৃন্দ ঢুকাতে হবে। আমি উনাকে জবাব দিয়েছি আমি ঢুকানোর কে ভাই। বাজারের নেতৃত্ব বাজারবাসী নির্ধারন করবে। আমি বলেছিলাম বাজারে আমি ব্যবসায়ী রাজপথে আমি বিএনপি। আমি বাজারে জোরপূর্বক দলীয় মানুষ ঢুকিয়ে আমার দলকে আমি জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ব করতে পারবো না। এই কথাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিকৃত করে আমার বিরুদ্ধে এই ভুয়া অভিযোগটি এনেছে।প্রিয় নেতৃবৃন্দ গত মিটিংয়ে আমার বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ করেছে যে আমি ওয়ার্ডকে আমার মতো চালাই। আপনারা আমার সাথে রাজনীতি করেছেন বিগত আন্দোলন সংগ্রাম অথবা দলীয় কোন ব্যাপারে আমি সবসময়ই আপনাদের সাথে পরামর্শ করে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতাম যার সাক্ষী আপনারা সবাই। তাই আপনারা এর বিচার করেন যে অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে এনেছে তা কতটুকু যুক্তিসংঘত। প্রিয় ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ আমার যদি কোন অপরাধ থাকে তাহলে এইগুলো আপনারা দেখেবেন বিচার করবেন। যদি আমার কোন অপরাধ না থাকে এবং যারা মিথ্যাচার করে আমার সম্মানে আঘাত করেছে এবং ওয়ার্ডে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে তা আমি আপনাদের কাছে ছেড়ে দিলাম আপনারা এর উপযুক্ত বিচার করবেন।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা