যুগভেরী ডেস্ক :::
বাংলাদেশ প্রতিবছর অন্তত পাঁচ হাজার নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এমনকি এদেশের নারীদের প্রানঘাতি রোগের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে জরায়ু ক্যান্সার। এমন বাস্তবতায় জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে সিলেটে শুরু হচ্ছে টিকাদান কার্যক্রম। ইউনিসেফের সহযোগিতায় মাসব্যাপী কার্যক্রমে সিলেট অঞ্চলে ২ লাখ ৪ হাজার জনকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান, ইউনিসেফ ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা। তারা জানান, ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও স্কুলের বাইরে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কন্যা শিশুদের এ টিকা প্রদান করা হবে। ব্যাক্স এ্যাপ বা অনলাইন রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে ফ্রি-তে এই টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সরকারি চিকিৎসালয়েও এই সময় টিকাদান কার্যক্রম চালু থাকবে। আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হলরুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়।
মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হোসাইন মোহাম্মদ আল জুনায়েদের সভাপতিত্বে ও ইউনিসেফ সিলেট অফিসের পরামর্শক শেখ আলী হায়দার আজমের উপস্থাপনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ গোলাম আযম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ সোশ্যাল বিহেভিয়ার চেইঞ্জ স্পেশালিষ্ট শেখ মাসুদুর রহমান, ইউনিসেফ সিলেটের অফিস প্রধান কাজী দিল আফরোজাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বক্তারা বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে। এটি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সারাদেশে আবারও বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। কেউ যাতে এ টিকা থেকে বাদ না পড়ে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে। ইপিআই ভ্যাকসিনের মধ্যে এইচপিভি সবচেয়ে দামী। এবারের লক্ষ্য হলো ৯৫ শতাংশ কিশোরীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। এইচপিভি ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি রয়েছে।
সিলেট বিভাগে কিশোরী ও ছাত্রীদের মাঝে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে। এ ক্যাম্পেইন সফল করতে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহে ব্যাপক প্রচার–প্রচারণা চালানো হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন