যুগভেরী ডেস্ক ::: কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারে করে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেট থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. ছগির মিয়া। তিনি জানান- বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আদালতে একটি মামলার হাজিরা রয়েছে মানিকের।
এর আগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সুপার, ডিএসবি, সিলেট স্বাক্ষরিত আদেশে (স্মারক নম্বর-৪২৯২) বিচারপতি মানিককে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় প্রেরণের নির্দেশনা দিয়ে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তাতে কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অলক শর্মা ও এসএএফ পুলিশ লাইনস সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাইকে হেলিকপ্টারে বিচারপতি মানিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আদেশে আরও বলা হয়, পুলিশি এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক তদারকি করবেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রফিকুল ইসলাম ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
এদিকে, সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ-চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক মঙ্গলবার সকালে জামিন পেয়েছেন। সকালে আদালত তাকে জামিন দেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিককে সিলেট অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্র্যাট আদালতে তুলে পুলিশ সিলেটের কানাইঘাট থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে আদালতটির বিজ্ঞ বিচারক মানিককে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেন। অপরদিকে, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আইনজীবী আদালতে এই মামলায় জামিন আবেদন করলে সেটি মঞ্জুর করেন আদালত। তবে অন্যান্য মামলা থাকায় তিনি কারাগারেই থাকছেন।
গত ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে একটি জঙ্গল থেকে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সহায়তায় আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরদিন (২৪ আগস্ট) সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে ওই দিন বিকালে আদালতে হাজির করলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে পাসপোর্ট আইনে মানিকের বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ২৪ আগস্ট সিলেট আদালতে প্রবেশের সময় আদালত প্রাঙ্গণে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতা শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারেন। তার অণ্ডকোষেও গুরুতর আঘাত লাগে। অনেকে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি জুতাও নিক্ষেপ করেন। আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওসমানীতে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়।
২০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর ১২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মানিককে ছাড়পত্র (ডিসচার্জ) দেয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিন বিকালে কড়া নিরাপত্তা ও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। শামসুদ্দিন মানিকের হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করেছিলেন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা