যুগভেরী ডেস্ক ::: ওয়ান ইলেভেনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনেক নির্মম নির্যাতন নির্লজ্জ চরিত্র হরণের খেলা দেখেছি। সেদিন অনেক দূর্নীতিবাজদের কষ্ট দেখেছি, এসবের পরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সব ভুলে যায়। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছিল। ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে আবার সেই পুরনো রূপ। সাবেক মন্ত্রী, এমপি, প্রভাবশালী আমলারা লুকানোর জন্য ইঁদুরের গর্ত খোঁজে পাচ্ছে না। শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের অনেক জায়গায় জবর দখলের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।
কোটি কোটি মানুষের মনে প্রশ্ন, দূর্নীতি আর লুটপাটে স্বৈরাচারী সরকারের পতন থেকে বর্তমানে যারা রাজনীতির মাঠে সক্রিয় আছেন তারা কি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন! বা করবেন?
হাজারো প্রাণের বিনিময়ে নতুন প্রজন্মের অর্জিত স্বাধীনতা ১৮কোটি মানুষের দেশপ্রেমের নিখাঁদ আকাঙ্খা স্বপ্নের সোনার বাংলা কি প্রতিষ্ঠিত হবে?
বিপ্লবী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর অতি অল্পদিনে বিএনপি জামায়াতের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের আচরণ দৃষ্টি ভঙ্গি দেশের কোটি কোটি মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। জামায়াতে ইসলামির সাথে জোট বেঁধে আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি বহির্বিশ্বে অনেক সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু ইদানীং কালে বিএনপিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিভিন্ন সভায় বক্তব্য যথেষ্ট কটাক্ষপূর্ণ, এবং মানহানিকর, অনেকটা দৃষ্টিকটুও বলা যায়। ছাত্র জনতার গণ বিল্পবে বিজয়ী ছাত্র নেতাদের দাম্ভিকতা এবং বিএনপিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী আমীরের সাম্প্রতিক বক্তব্যে আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে অনেক প্রশ্ন, সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় কিংবা রাজনৈতিক দলের নেতারা যদি নিজেদের স্বার্থের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকেন তাহলে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পতিত স্বৈরশাসকের ঘাপটি মেরে বসে থাকা নিকৃষ্ট অমানুষগুলো সুযোগ পেলেই দেশকে চরম অস্থিতিশীল করে তুলবে।
আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থেকে বিভিন্ন সময়ে মৌলবাদ জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে আবার নিয়ন্ত্রণের নাটক করে রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক ক্ষতি করেছে।
এখন বিপ্লবী সরকার এবং বিএনপির নেতৃত্বে অপরাপর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলা এটা সময়ের দাবী। বাংলাদেশ থেকে চিরতরে উগ্রবাদ মৌলবাদ জঙ্গিবাদ এবং দূর্নীতিবাজদের মুল উৎপাটন করতে না পারলে, বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে পাগল হয়ে যাওয়া ইন্ডিয়া সহ বহিঃশত্রুরা মিলে কখন আবার মৌলবাদ জঙ্গিদের উসকে দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। সুদীর্ঘকাল থেকে বাংলাদেশে মানবাধিকার হারিয়ে গেছে। কিছু ঘটনা এখনও ঘটে চলছে যা খুবই দুঃখজনক। অনেক নির্যাতিত রাজনৈতিক নেতাদের মতো চিহ্নিত কিছু দাগী সন্ত্রাসীও জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছে সবকিছুই কি স্বাভাবিক বিষয়? একজন বিশ্বজয়ী মানুষকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে পেয়ে যেখানে জাতি হিসেবে ধন্য হওয়ার কথা! কিন্তু না, তাকে নানা ভাবে বিতর্কিত প্রশ্নবিদ্ধ এবং ব্যর্থ করে সরিয়ে দিতে একটা গোষ্ঠী যেন মরিয়া হয়ে আছে।
হিংস্রতা আর বর্বরতা যেন আমাদের পিছু ছাড়ছে না। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি অতীতে অনেক হয়েছে, সংখ্যালঘুদের বাসা বাড়িতে হামলা কিংবা ধর্ম নিয়ে নোংরা রাজনীতি নিশ্চয়ই দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে না, এবং এটা ইসলামও সমর্থন করে না।
মনে রাখা ভালো পতিত স্বৈরশাসক খুব বেশি দুরের কোন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেনি? একদম বাড়ির পাশে একটি দেশে আছে! এটা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস সরকারের জন্য অশনিসংকেত। সুতরাং প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে। সুতরাং দীর্ঘদিন ফ্যাসিষ্টরা সরকার যে নারকীয় হত্যাকান্ড গণহত্যা সংঘটিত করেছিল লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা যারা দূর্নীতি করেছিল দ্রুত তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তাই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় গণ বিল্পবের বিজয়ের আকাঙ্খা ধারণ করে দৃঢ়তার সহিত জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে, মৌলবাদ জঙ্গিবাদ এবং দূর্নীতিবাজদের সমূলে ধ্বংস করতে না পারলে পথ হারাবে বাংলাদেশ।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা