যুগভেরী ডেস্ক ::: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিলেটে সংঘর্ষে সাংবাদিক এ টি এম তুরাব নিহতের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। নিহত সাংবাদিকের ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ বাদী হয়ে দায়েরকৃত এ অভিযোগে তুরাবের মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করা হয়েছে। বুধবার রাতে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত এ অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ৮–১০ জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।
নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় কাজ করতেন।
১৯ জুলাই সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক এ টি এম তুরাব নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
তবে পুলিশ বলছে, তুরাব কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, সেটি নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। বন্দরবাজার এলাকায় সংঘর্ষে পুলিশের ওপর হামলা ও তুরাব নিহতের ঘটনায় ২০ জুলাই সিলেটের কোতোয়ালি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার বেলা ১টা ৫৫ মিনিটে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান করছিলেন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। একপর্যায়ে বিএনপি মিছিল শুরু করলে তুরাব মিছিলের পেছনে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে অবস্থান নেন। মিছিলটি নগরের পুরান লেন গলির মুখে পৌঁছালে সশস্ত্র পুলিশ বিপরীত দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় হঠাৎ লাগাতার গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়। এ সময় তুরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন অন্য সহকর্মী ও পথচারীরা তুরাবকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় এবং তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ায় উন্নত চিকিৎসার তাকে নগরের সোবহানীঘাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে তিনি মারা যান।
গোলাগুলির স্থির ও ভিডিও চিত্র ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের কাছে আছে বলে আবুল আহসান মো. আজরফ অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, সাংবাদিক তুরাব নিহতের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলমান আছে। একই ঘটনায় অদুটি মামলা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এ জন্য পরিবারের করা অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একসঙ্গে তদন্ত করবেন।
বুধবার রাতে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার সময় সিলেটের সাংবাদিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় থানায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ।
নিহত তুরাবের বড় ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ বলেন, তার ভাই নিহতের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি ‘এফআইআর’ হিসেবে নথিভুক্ত না হলে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হবেন। এ জন্য ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যদের নাম-ঠিকানাও সংগ্রহ করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, সাংবাদিক তুরাব কার গুলিতে নিহত হয়েছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা