যুগভেরী রিপোর্ট
মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সে দেশে যেতে পারেননি ৩০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক। এ পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
ভোগান্তিতে পড়াদের পাশে সরকার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সময় বাড়ানোর জন্য মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে প্রবাসী মন্ত্রণালয়।’
প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীপ্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী
শনিবার দুপুরে সিলেট নগরের ঐতিহ্যবাহী আলিমা মাদরাসা পরিদর্শনকালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্র এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ করতে না পারার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই সংকট তৈরির পেছনে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় পাঁচ লাখের ওপরে কর্মী প্রেরণের জন্য দেশটির সরকার কোটা দিয়েছিল। সেই কোটা পূরণে কাজ করেছিল বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন বায়রার সঙ্গে কথা বলে কাদের ভিসা হয়েছে আর কাদের ভিসা হয়নি সেই তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বায়রা সেই তালিকা দিতে পারেনি। ফলে ফ্লাইটের সমস্যা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে কর্মী পাঠানোর জন্য ২২টি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। একইসঙ্গে মালয়েশিয়া সরকারকে সময় বাড়ানোর জন্যও চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এখনো সেই চিঠির উত্তর আসেনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ সমস্যা সমাধানে অ্যাম্বেসি ও মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ সংকট তৈরির পেছনে যে বা যারা জড়িত তা অনুসন্ধান করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। সরকার চায় বৈধপথে শ্রমিক বিদেশে যাবে, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে। আমাদের উদ্দেশ্য হয়রানি করা না, যারা হয়রানি করছে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে আলিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। পরে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ৫ আসনের সাংসদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান ও মাদ্রাসার বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্যতম আগ্রহের মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ২০০৯ সালে প্রথম দফায় বন্ধ হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের শেষে চালু হয় শ্রমবাজার। পরে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আবার বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। সেই শ্রমবাজার আবার চালু হয় ২০২২ সালে। এখন আবার কর্মী নেওয়া স্থগিত করল দেশটি।
আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়: প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেছেন, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার উন্ন্য়নে বর্তমান সরকার ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছে। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষকতা পেশায় সাফল্য এবং আলোকিত মানুষের দ্বারা দেশ গড়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার কমিটমেন্ট। এ জন্য শিক্ষকদেরও কমিটমেন্ট থাকতে হবে। আমরা জানি অভিভাবকরা তার সন্তানকে অনেক আশা নিয়ে মাদ্রাসায় পাঠান। শিক্ষকদের পরিচর্যায় তারা যাতে উচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারে তার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যাতে কোন দিক দিয়ে পিছিয়ে না থাকে, সে লক্ষে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
শনিবার সকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক মো. ফজলুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমিন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিা মো. হুছামুদ্দিন চৌধুরী এমপি, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো: নাসির উদ্দিন খান।
অনুষ্ঠানে সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ মুর্ত্তাযা কর্তৃক কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহমুদ ইকবাল।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার সমস্যাসমুহ চিহ্নিত করার জন্যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রাসার উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা