নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেঞ্চুগঞ্জ
হাতেগোনা কয়েকদিন পর আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনর ভোট গ্রহন। সময় ঘনিয়ে আসায় দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে প্রার্থীদের। প্রার্থীরা নিজ প্রচারণায় গন-সংযোগ, উঠান বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কিন্তু ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ আলোচনা কম দেখা যাচ্ছে। এবারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে সামনে এসেছে নানা সমীকরণ। আলোচনায় আছেন চাচা-ভাতিজা দুই প্রার্থী।
এবারের চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার হলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম (কাপ পিরিচ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাছিত টুটুল (মোটর সাইকেল), উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মুরাদ (ঘোড়া), ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বির (আনারস) ও অ্যাডভোকেট সুলতানা রাজিয়া ডলি (দোয়াত কলম)।
পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে চারজনই আওয়ামী লীগের। এনিয়ে দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে কোন্দল। নুরুল ইসলাম আওয়ামী ঘরানার মানুষ। ১৯৯১ সালে ও ২০১৯ সালে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একটি অংশের ভোট পেয়েছিলেন। আবদুল বাছিত টুটুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় দুই যুগ ধরে। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য। ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন টুটুল। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে ভরাডুবি হয় তার। এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় টুটুলের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার ভাতিজা আনারস প্রতীকের আশফাকুল ইসলাম সাব্বির।
আশফাকুল ইসলাম সাব্বির সাবেক ছাত্রনেতা পরবর্তীতে প্রবাসী হলেও স্থানীয় সাংসদের আস্থাভাজন হওয়ায় উপজেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে মজবুত অবস্থান। দলীয় পদধারী না হলেও নেতাকর্মীদের আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছেন তিনি।
অন্যদিকে তার চাচা মোটরসাইকেল মার্কার আব্দুল বাসিত টুটুলও বলয় ভারি করছেন দিন দিন। শুরুর দিকে অনেকটাই নিরব থাকলেও সমর্থকদল বড় করে আলোচনায় আছেন তিনি। চাচা-ভাতিজার ভোট লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কি হয় তাই দেখার অপেক্ষা সাধারণ ভোটারদের। অন্যদিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নির্বাচন করছেন তার পুরাতন প্রতীক কাপ পিরিচ মার্কা নিয়ে।
উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে তিনিই বয়োজ্যেষ্ঠ। তার বয়স, অভিজ্ঞতা ও দীর্ঘ দিনের জনসম্পৃকতা কাজে লাগিয়ে এবারো জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
অন্যদিকে তারই গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশী ভাই ঘোড়া মার্কার জহিরুল ইসলাম মুরাদ। তিনি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সে সুবাদে ভোট লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অবস্থান আছে তারও।
এই দুজনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ভাবে দুভাগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবারও বিএনপি ভোটে না আসার ঘোষণা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত কর্মীরা ভোটে এলে পাল্লা ভারি হবে মুরাদের এমনটাই ভাবছে সাধারণ ভোটার। অন্যদিকে দোয়ার কলম মার্কার অ্যাডভোকেট সুলতানা রাজিয়া ডলির উল্লেখযোগ্য প্রচার প্রচারণা নেই। ভোটের এই হিসেব নিকেশে তেমন আগ্রহ নেই সাধারণ ভোটারদের।
চায়ের দোকানে নেই নির্বাচনী উত্তাপ আলোচনা। শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির উপর নির্ভর করছে ভোট লড়াই জমবে কি না।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন