নিজস্ব সংবাদদাতা, বিয়ানীবাজার :::
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন। এরই মধ্যে জোর প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
ব্যক্তি ইমেজ, নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অবস্থান, রাজনৈতিক বলয়সহ নানা ইস্যুতে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের অবস্থান ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন তৃণমূলের আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তারা কাকে বেছে নিবেন, কার বিরাগভাজন হবেন-এ নিয়ে গ্রামীণ জনপদে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর দুই জনের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগ মনা হলেও রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় নয়।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম পল্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও আব্দুল বারী এবং আওয়ামী লীগ নেতা গৌছ উদ্দিনসহ প্রত্যেকের স্থানীয় রাজনীতিতে পৃথক বলয় ও প্রভাব রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলে আব্দুল বারী ও গৌছ উদ্দিন ব্যতিত অন্য সবাই প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। ওয়ার্ড-গ্রাম পর্যায়েও আছে তাদের কর্মী-সমর্থক, শুভাকাঙ্খী। তাই অধিকাংশ এলাকায় এখনো চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।
উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থী জয়লাভ করবেন আবার কে পরাজিত হবেন, এই শঙ্কায় ইউনিয়ন-ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলরা কেউ আছেন চুপচাপ, কেউ আছেন আড়ালে। ২৯ শে মে নির্বাচন শেষ হলেও ভোটের মাঠের বিভক্তি থাকবে দীর্ঘসময় ধরে। আওয়ামী লীগের বিভক্তির এই রেশ পড়েছে যুবলীগ-ছাত্রলীগেও।
প্রকাশ্যে এই দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা কারো পক্ষ নিচ্ছেননা। তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদ ও পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেদওয়ান আহমদ পক্ষ নিয়েছেন গ্রুপ প্রধান আবুল কাশেম পল্লবের। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগও পল্লবের প্রকাশ্যে পক্ষে।
বীরমুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খানের পক্ষ নিয়েছে কৃষক লীগ। পৌর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরা চলছেন যে যার মত করে। ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সভাপতি একদিকে গেলে সাধারণ সম্পাদক ছুটছেন অন্যদিকে।
স্থানীয় একটি আইপি টিভির সাথে নির্বাচনী হাওয়া নামক অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক চাপ প্রয়োগ করে তৃণমূলের নেতৃত্বকে তাদের পক্ষে নিচ্ছেন। একই ধরণের অভিযোগ করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী গৌছ উদ্দিন।
তবে সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান খান জানান, কাউকে চাপ দেয়া হচ্ছেনা। দলীয় সভনেত্রীর নির্দেশে নির্বাচন হচ্ছে উন্মুক্ত, কর্মী-সমর্থকরাও স্বাধীন। তারা যে কাউকে বাছাই করতে পারেন।
এদিকে সময়ের ব্যবধানে ভোটের মাঠের চিত্র ক্ষনে ক্ষনে পাল্টাচ্ছে। নির্বাচনের যত সময় এগিয়ে আসছে প্রার্থীদের অবস্থান একেক এলাকায় একেক রকম চিত্র ধারণ করছে। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, গৌছ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান জামাল হোসেন ও প্রভাষক মো. জহির উদ্দিন এলাকা ভিত্তিক ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থান করছেন। তবে প্রচারণায় পিছিয়ে নেই আব্দুল বারী, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মো. জাকির হোসেন সুমন। নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে ভোটের মাঠে তারাও ধাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এলাকাভিত্তিক ভোটার সমর্থকদের অবস্থান পরিস্কার হলেও পুরো উপজেলা মিলিয়ে কে এগিয়ে রয়েছেন সেটিও সময়ের ব্যবধানে পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে চেয়ারম্যান পদে কুশিয়ারা নদীর ওপার থেকে যে প্রার্থী ভোট টানতে পারবেন তিনিই হবেন উপজেলার মুরব্বী।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা