নিজস্ব সংবাদদাতা, চুনারুঘাট :
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার মোট ১৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। শুক্রবার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এসেছেন তরুণ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা হলেন রায়হান উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান জুয়েল। এ দুই প্রার্থীকে সব সময় এমপি সুমনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় বলেই এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তারাও বিভিন্ন সময় নিজেদের এমপির সমর্থিত লোক বলে দাবি করেছেন। তবে এমন কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, নির্বাচনে অনেকেই অংশগ্রহণ করে। মানুষ যাকে ভালোবেসে নির্বাচিত করবে, সে-ই হবে জনগণের নেতা। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করব ন্যায়বিচার, সুষ্ঠু ভোট। কারণ আমি সুষ্ঠু ভোটের মধ্য দিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছি। এ জন্য আমি নিশ্চিত করব সুষ্ঠু ভোট। বিশেষ করে তরুণ যারা মানুষের জন্য কাজ করতে চাও, তারা সামনে এগিয়ে এসো। আর ধান্দা নিয়ে যদি নির্বাচনে এসে থাকো, প্লিজ আসার দরকার নেই।’ যে বা যারা মানুষের জন্য রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতে আসবে, তিনি ও এলাকার মানুষ তাকে সমর্থন করবেন বলেও জানান সংসদ সদস্য সুমন।
চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) সাত ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থী রয়েছেন। প্রার্থীদের সবাই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবু তাহের, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান চৌধুরী, তরুণ প্রার্থী রায়হান উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান জুয়েল।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, মনোনয়নপত্র বাছাই ১২ মে, আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে, আপিল নিষ্পত্তি ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৯ মে ও প্রতীক বরাদ্দ ২০ মে। ভোট গ্রহণ হবে ৫ জুন। চুনারুঘাট উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৮ জন।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় বিএনপির বড় নেতা প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচন জমে উঠবে। এদিকে শুরুর দিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা বললেও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদির লস্কর। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী একাধিক হলেও অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের এলাকায় বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আরেক প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান। তিনি চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। সে হিসেবে ব্যাপক পরিচিত মুখ। ভোটের মাঠে এ দু’জনের আলোচনা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এ দু’জনের মধ্যেই হবে আসল লড়াই।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান চৌধুরী। তিনিও প্রচারণায় মাঠ গরম রেখেছেন।
তবে জাতীয় নির্বাচনের মতোই এ এলাকার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জয়-পরাজয়ের হিসাব নির্ভর করছে চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিকের ভোটের ওপর। চুনারুঘাট উপজেলায় প্রার্থী পাঁচজন হলেও মূলত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতিসহ দু’জনের প্রচারে জমে উঠেছে নির্বাচনী এলাকা।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা