দূর্গেশ সরকার বাপ্পী গোয়াইনঘাট (সিলেট) ::: সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে চায় ও দেশের খাদ্য নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে চায়। সিলেটের সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাট উপজেলার কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহারে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে, নতুন বীজ ও ভাল ফসলের জন্য পদর্শনী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি কর্মকতারা। লাইন লোগো ও পারসিং পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপনে কৃষকের মাঝে অাগ্রহ বেড়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে বিভিন্ন জাতের ধানের ১১২ টি প্রদর্শনী প্রজেক্ট করেছে কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, লোগো পদ্ধতি ধান চাষের একটি আধুনিক প্রযুক্তি। লাইন ও লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ধানের ভালো ফলন পাওয়া যায়। নতুন এ পদ্ধতিতে অধিক ধান উৎপাদনসহ রোগ বালাই কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কম খরচে বাড়তি উৎপাদন হওয়ায় সহজেই এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে কৃষকরা। ফলন বাড়ানো এবং চাষের খরচ কমানোর জন্য লাগসই আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। ধান চাষের জন্য আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। রুপনপদ্ধতি প্রতি ১০ সারির মাঝে ৮ থেকে ১৬ ইঞ্চি ফাঁকা জমি দিতে হবে অর্থাৎ একটি লাইনে ধানের চারা লাগানো বাদ রেখে অন্য লাইনে চারা লাগাতে হবে। এভাবে পুরো জমিতে ধানের চারা রোপণ শেষ করতে হবে। চারার প্রতিটি গোছায় অধিক কুশি ছড়ানোসহ ফসলের জমিতে প্রয়োজনীয় আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সহজে পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ ও সারের ব্যবহার করা যায় এবং আন্ত:পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়। ফলে ধানের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কৃষি অফিস থেকে জানিয়েছে,অন্যনো পদ্ধতিতে ধান চারা বেড়ে ওঠার পর ঘাসফড়িং ও মাজরা পোকা ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। সাধারণত ছায়াযুক্ত স্থানে এ ধরনের পোকা বেশি হয়। লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হলে পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস নিশ্চিত হয় পোকার আক্রমণ কমে। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ ইত্যাদি পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়, আগাছা পরিষ্কার করে লোগোর লাইনে পুতেঁ রাখলে জৈব সার হয়। সরেজমিনে উপজেলার তোয়াকুল ইউনিয়নে কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে ধানের ফলন বাড়েচ্ছে জানান । লোগো পদ্ধতিতে সঠিকভাবে চাষ করলে ধানের পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ করা সহজ হচ্ছে। কৃষকরা আশাবাদী ধানের ফলন বিঘা প্রতি ৫ মণ বাড়তে পারে। তাছাড়া পোকামাকড় কম হওয়ায় কীটনাশক ব্যবহার কমছে ও খরচও কমে আসছে। এ ব্যাপারে উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মিসবাহ আহমদ জানান,তার সেচ পাম্পের আওতায় প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।পাঁচ জন কৃষকের পাঁচটি প্রদর্শনী রয়েছে।তারা লোগো পদ্ধতিতে রোপণ করার কারণে জমিগুলো খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। অাশা করছি ভালো ফলন অাসবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রণি বলেন,এ বছর গোয়াইনঘাট উপজেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ৯,৮,১৯ যা লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি। উপজেলার মাঠ প্রদর্শনী নিয়ে কাজ করছি আমরা, এতে কৃষকদেরও আগ্রহ আছে। নতুন প্রদর্শনী নিয়েছেন। লাইন লোগো ও পার্সিং পদ্ধতিতে চাষ করে ভালো ফলনের আশা রয়েছেন কষকরা। লাইন-লোগো পদ্ধতিতে ধান রোপণ করলে কি কি উপকার হবে এ বিষয়ে কৃষকদেরকে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি আমরা। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেশে কৃষি খাতেকে এগিয়ে নিতে কৃষিনিয়ে গবেষণা,কৃষকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার । আজকে দিগন্তবিস্তৃত হাওরে সোনার ধানের যে অপরূপ হাসি দেখা যাচ্ছে, দেশের কৃষকের মুখেও সে রকম অমলিন হাসি ধরে রাখতে চায় সরকার। সেজন্য, সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদেরকে সার,বীজ,সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমানো ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে ৭০% ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ বিভিন্ন যন্ত্র কৃষকদেরকে দিচ্ছে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা