যুগভেরী ডেস্ক ::: বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা পর্যন্ত বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। নতুন এই দাম মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এতথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে না, সমন্বয় করা হচ্ছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে, সে কারণে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে বলে জানান বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) এর নবনির্বাচিত নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি প্রফিট করতাম তাহলে দাম বাড়ছে বলতে পারতেন। আমরাতো খরচ উঠাতে চাচ্ছি। খুবই সামান্য পরিমাণে দাম বাড়তে পারে। লাইফ লাইন গ্রাহকের (৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারী) মাসের বিল ২০ টাকার মতো বাড়তে পারে। এখন তারা যদি একটু সাশ্রয়ী হন, তাহলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা। তিনি বলেন, ১ কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক রয়েছে যাদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকার মতো নেওয়া হয়। সেখানে হয়তো ৩০ থেকে ৩৫ পয়সার মতো বাড়তে পারে। তবে যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, বাসায় দুই থেকে ৩টি এসি ব্যবহার করে, তাদের বিল ৭০ পয়সার মতো বাড়তে পারে। তাদের মাসের বিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়ে গেলে কোন সমস্যা হবে না। সরকার ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। এখন রাজস্ব থেকে ভর্তুকি দিচ্ছে এটি খুবই ব্যববহুল। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনও কয়লা থেকে পাওয়া বিদ্যুতের দাম সবচেয়ে কম। পরমাণু বিদ্যুতের দাম সাড়ে ৫ টাকার মতো পড়বে। ফার্নেস অয়েলে ১৪ থেকে ২০ টাকার মতো পড়ছে। যে কারণে কয়লার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যেভাবে হোক কয়লা সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে হবে। তাদের বিল পেমেন্ট দিতে হবে, যাতে কয়লা আমদানি ও সরবরাহে কোন সংকট না হয়। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায়। তেল-গ্যাস ও কয়লার আন্তর্জাতিক বাজারদর ক্ষেত্র বিশেষে একই থাকলেও আগের চেয়ে ডলার প্রতি ৪০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। এখানেই বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। আমরা ধরে নিচ্ছি আগামী ৩ বছর ডলারের দাম ১১০ টাকা থাকবে, সেভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে দৈনিক ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হলে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ অর্ধেকে নেমে আসতো। যে কারণে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে ৭০ পয়সার মতো বাড়িয়ে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হবে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। তার ৩ সপ্তাহ আগে ১২ জানুয়ারি গড়ে ৫ শতাংশ বাড়িয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গঠনের পর থেকেই বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে আসছিল সংস্থাটি। ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ইউনিট প্রতি ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তারপরেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন