
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের শেষ নির্বাচনী জনসভায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় কোম্পানীগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ইমরান আহমদের জনসভায় মিছিল নিয়ে যোগ দেন কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তেলিখাল ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল ওয়াদুদ আলফু। এসময় জনসভার সঞ্চালক কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অখিল চন্দ্র বিশ্বাস চেয়ারম্যানের আলফুর নাম ও পদবী সঠিক ভাবে না বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার উপর আক্রমণ চালান আলফু। এরপর দুই নেতা ও তাদের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে মন্ত্রী ও এলাকার মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদিকুর রহমান বলেন, এটা তো আপনারা ভালো জানেন। আমি এ ব্যাপারে আর কিছু না বলি।
জানা যায়, সংঘর্ষের পর জনসভা শুরু হয়। এসময় সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়াসহ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা শেষ করেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে সিলেট-৪ আসনের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর উপজেলায় প্রচার উন্নয়ন হয়েছে। আপনাদের চলাচলের বড় বড় সড়ক থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের গ্রামীণ রাস্তা, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল সকল স্থানে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে এবং কিছু কাজ চলমান রয়েছে। এসব উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তি ও সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি খুলতে ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট বেশি দিতে হবে।
পাথর কোয়ারি বিষয়ে তিনি বলেন, পাথর কোয়ারি খুলা বা বন্ধ করা আমার কাজ নয়। পাথর কোয়ারির বিষয়টি দেখেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। পরিবেশের সমস্যার কারণে পাথর কোয়ারি বন্ধ হয়েছে। তবে আমি চেষ্টা করেছি সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারি খুলতে। সর্বশেষ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও আমি অনুরোধ করেছি আমার এলাকার জনসাধারণের জন্য পাথর কোয়ারি খুলে দিতে। পাথর কোয়ারি খুলতে আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে এনিয়ে আপনাদের আর কথা বলতে হবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়। তাই বিএনপির অযুক্তিক আন্দোলনে সাড়া না দিয়ে ৭ জানুয়ারি সকাল থেকে বাড়ি-ঘর ও আশপাশের মা-বোনদের নিয়ে যুবক থেকে বৃদ্ধ সকলকেই দলদলে ঝাঁকেঝাঁকে ভোট কেন্দ্রে এসে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কোম্পানীগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজারো নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদের সভাপতিত্বে নির্বাচনী জনসভা শুরু হয়। এর আগে দুপুর দেড়টা থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতা–কর্মী ব্যানার, পোস্টার হাতে নিয়ে ঢোল, বাঁশিসহ নানা ধরনের বাদ্যের যন্ত্রের সঙ্গে নেচে নেচে স্লোগান নিয়ে দলে দলে মিছিল দিয়ে জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় প্রধানবক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান।
এসময় বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজমল আলী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মজির উদ্দিন, সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ প্রমুখ।
সংবাদটি ভালো লাগলে স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন